• রবিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৫, ০৬:০১ অপরাহ্ন

কেশবপুরে স্কুলছাত্রীর মৃত্যুতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের খ্রিস্টান মিশনারী ঘেরাও

উৎপল দে,কেশবপুর (যশোর) / ৩৪৬ বার দেখা হয়েছে
সর্বশেষ : মঙ্গলবার, ১৮ মার্চ, ২০২৫

যশোরের কেশবপুরে খ্রিস্টান মিশনারীতে এক স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় মঙ্গলবার সকালে ওই মিশনারী ঘেরাও করে বিক্ষোভ করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা। খবর পেয়ে পুলিশ ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপুরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর সঠিক রহস্য উন্মোচন করার দাবি জানান। সে সময় নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যসহ অন্য তিন আদাবাসী স্কুলছাত্রীর পরিবারের স্বজনেরা ওই মিশনে হাজির হন। তাদের দাবির মুখে মিশনে থাকা তিন স্কুলছাত্রী রেবিকা ত্রিপুরা, জেসিন্তা ত্রিপুরা ও স্বস্তিকা ত্রিপুরাকে পুলিশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
জানা গেছে, গত শুক্রবার রাতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে মৃত অবস্থায় রাজেরুং ত্রিপুরা (১৫) নামে আদিবাসী খ্রিস্টান স¤প্রদায়ের এক স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। রাজেরুং ত্রিপুরা কেশবপুর পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। সে বান্দরবান জেলার থানচি উপজেলার কালুপাড়া গ্রামের রমেশ ত্রিপুরার মেয়ে। রাজেরুং ত্রিপুরা কেশবপুর শহরের সাহাপাড়ার খ্রিস্টান মিশনে থেকে পড়াশোনা করতো। পুলিশ জানায়, স্কুলছাত্রীর মরদেহ উদ্ধারের পর খ্রিস্টান মিশনে গেলে কর্তৃপক্ষ জানান, শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজেরুং ত্রিপুরা তার শয়নকক্ষের জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেছে।
পুলিশ ও খ্রিস্টান মিশনারী সূত্রে জানা গেছে, কেশবপুর সাহাপাড়ার খ্রিস্টান আউটরিস্ট সেন্ট্রাল ফাউন্ডেশন অব বাংলাদেশ প্রকল্পের অধীনে ৪৪ জন আদিবাসী কিশোরীরা ওখানে থেকে পড়াশোনা করে। এদের মধ্যে স্কুলছাত্রী রাজেরুং ত্রিপুরাও ছিল।
এদিকে ওই স্কুলছাত্রীর মৃত্যুর পর থেকেই গুঞ্জন উঠেছিল, তাকে নির্যাতন করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। এরপর এ ঘটনায় সোমবার বৈষম্যবিরোধী ছাত্ররা ওই মিশন ঘেরাও করে। সে সময় নিহত স্কুলছাত্রীর পরিবারের সদস্যসহ অন্য তিন আদাবাসী স্কুলছাত্রীর পরিবারের স্বজনেরা ওই মিশনে হাজির হন। তাদের দাবির মুখে মিশনে থাকা তিন স্কুলছাত্রী রেবিকা ত্রিপুরা, জেসিন্তা ত্রিপুরা ও স্বস্তিকা ত্রিপুরাকে পুলিশ পরিবারের নিকট হস্তান্তর করে।
ওই খ্রিস্টান মিশনারীর পরিচালক খ্রীস্টফার সরকার বলেন, ওই মেয়েটিকে তার নিজের শয়নকক্ষ থেকে জানালার গ্রিলের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচানো অবস্থায় উদ্ধার করা হয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে গেলে তাকে চিকিৎসকেরা মৃত ঘোষণা করে। তাকে কোন ধরনের নির্যাতন করা হয়নি। মিশনে থাকা তিন ছাত্রীর পরিবারের দাবির কারণে পুলিশের মাধ্যমে স্বজনদের নিকট তাদেরকে দেওয়া হয়েছে।
কেশবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, নিহত ছাত্রীর বাবা এ বিষয়ে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি অপমৃত্যু মামলার সঙ্গে সংযুক্ত করে রাখা হয়েছে।
এ ব্যাপারে মনিরামপুর-কেশবপুর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) ইমদাদুল হক বলেন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্রদের মিশন ঘেরাও করে বিক্ষোভের বিষয়ে জেনে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। নিহত ছাত্রীর বাবার অভিযোগ কেশবপুর থানা পুলিশ পেয়েছে। ওই অভিযোগের সূত্র ধরে বিষয়টি সুষ্ঠুভাবে তদন্ত করা হবে। এ ছাড়া ওই মিশনের তিন ছাত্রীকে তাদের পরিবারের কাছে দেওয়া হয়েছে।


আপনার মতামত লিখুন :

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও খবর...